ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪ , ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেড় শতাধিক কোম্পানি নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ১৭-১০-২০২৪ ০৪:৪৬:৩১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৭-১০-২০২৪ ০৪:৪৬:৩১ অপরাহ্ন
দেড় শতাধিক কোম্পানি নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ফাইল ছবি
খবরটি উদ্বেগের। গত দুই মাসে (আগস্ট ও সেপ্টেম্বর) সিটি গ্রুপ, বিএসআরএম, ইউএস-বাংলাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গ্রুপের প্রায় দেড় শতাধিক কোম্পানি নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে একদিকে যেমন কয়েক লাখ মানুষ কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে, অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে দেশীয় অর্থনীতিও।


কোম্পানিগুলোর দেওয়া তথ্য বলছে, পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থায়ীভাবেই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ১৬০টির মতো কোম্পানি বন্ধের প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলছে। বন্ধের তালিকায় ছোট প্রতিষ্ঠান যেমন রয়েছে, তেমনই বড় গ্রুপের প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরে নিবন্ধিত এসব কোম্পানির মধ্যে পণ্য সরবরাহ ও সেবাদানকারী উভয় খাতের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া নতুন বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়ে নিবন্ধন নেওয়া কোম্পানিও বন্ধের তালিকায় আছে।

যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ মাসে (মে থেকে সেপ্টেম্বর) ১২৮টি কোম্পানি বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আগস্ট মাসেই রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ ৪৬টি কোম্পানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। আর পরের মাস সেপ্টেম্বরে বন্ধ হয়েছে ২৬টি কোম্পানি। এ ছাড়া জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে ৮৩টি কোম্পানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকেই কোম্পানি বন্ধের এই সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। সরকারি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, জুন মাসে ১৬টি বেসরকারি কোম্পানি বন্ধ হয়েছে। আর জুলাই মাসে বন্ধ হয় ২১টি।

এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বন্যার প্রভাবে বিভিন্ন বাণিজ্যিক খাত বিশেষ করে শিল্প, পর্যটন, কৃষি ও সেবা খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন শ্রম অসন্তোষের কারণে দেশের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা চলছে। এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আরও বিপাকে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বন্ধ হচ্ছে যেসব দেশি কোম্পানি
দেশের শীর্ষ স্থানীয় করপোরেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ তাদের ৩০টি কোম্পানি বন্ধ করে দিচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটি হেয়ার অয়েল, দি এশিয়া প্যাসিফিক রিফাইনার্স, সিটি সিড ক্রাশিং ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউনিট-২), হাসান ডাল মিলস, সিটি ফাইবার্স, হাসান পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, হামিদা প্লাস্টিক কনটেইনার্স, হাসান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সিটি বিস্কুট, সিটি কনডেন্সড মিল্ক, হামিদা অ্যাগ্রো ফুড, শম্পা পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি, রূপসী সুগার মিলস, শম্পা সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, সিটি পোলট্রি ও ফিশ ফিড, সিটি ভেজিটেবল অয়েল মিল, কোনাপাড়া অয়েল মিলস, হাসান ভেজিটেবল অয়েল মিলস, এফ রহমান অয়েল মিলস, আজগর অয়েল মিলস, ফারজানা অয়েল রিফাইনারিজ, সিটি ব্র্যান অয়েল, সিটি কোকোনাট অয়েল মিল, রহমান কোকোনাট অয়েল মিলস, সাগুরনাল হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ, এফ রহমান শিপিং লাইনস, সিটি প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল, হোসেন্দি পেপার মিলস, সিটি টেস্টি বাইট ও দ্বীপা ফুড প্রডাক্টস।

এসব কোম্পানি বন্ধে অবসায়ক (অবসানের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত বা ব্যক্তি সংস্থা) নিয়োগ দিয়েছে গ্রুপটি। এরই অংশ হিসেবে অবসায়ক আইনজীবী জি কে রাজবংশী গত আগস্টে কোম্পানি বন্ধের জন্য সেপ্টেম্বরে ইজিএম আহ্বান করেন।

এ ছাড়া অন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা গ্রুপ তাদের পাঁচটি কোম্পানি বন্ধ করতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে গত সেপ্টেম্বর মাসে কোম্পানির ইজিএম অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ইউএস-বিডি সিকিউরিটি সার্ভিস, ইউএস-বাংলা গ্রুপ, ইউএস-বাংলা ফার্নিচার, ইউএস-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইউএস-বাংলা অ্যাগ্রোর জন্য অবসায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর বাইরে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পিতার নামে মাদারীপুরে গড়া প্রতিষ্ঠান আসমত আলী খান সেন্ট্রাল হসপিটাল লিমিটেডও বন্ধ হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতের আরেকটি কোম্পানি ল্যাব কোয়েস্টও বন্ধ হচ্ছে।

ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বিএসআরএম গ্রুপ। এই গ্রুপের রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ বন্ধের জন্য সিফিক বসাক অ্যান্ড কোংকে অবসায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ডায়মন্ড গোল্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড গোল্ড ম্যানুফ্যাকচারিং বন্ধের জন্য গত আগস্ট মাসে রহমান সৈয়দ জিল্লুর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট কোম্পানি অবসায়ক নিয়োগ দিয়েছে। এছাড়া বন্ধ হচ্ছে পেপার কাপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইনটেক গ্রিনপ্যাকও।

 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ